আপনি আপনার সমাজের দিকে তাকান, দেখবেন সমাজের গুরুত্বপূর্ণ নানা কাজে তরুণদের অংশীদারিত্ব কম। সামাজিক উন্নয়নের নানা কাজে তরুণদের সামান্য অংশের অনেকটা বাধ্য হয়েই অংশগ্রহণ থাকলেও সমাজে নানা ধরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও গুরুত্বপূর্ণ কাজে এদের অংশগ্রহণ নেই বললেই চলে।
এখন প্রশ্ন এমনটা কেন হয়? এখানে সাধারণত দুটি ঘটনা ঘটে থাকে। এক, সমাজ সেই ধরণের তরুণদের সংখ্যা কম যারা আদতে নানা সামাজিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নে ইনপুট দিতে পারে। দুই, সমাজ তরুণদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে ইনপুট দিতে ওইরকমভাবে স্বাগত জানায় না। কিংবা তারুণ্যের প্রতি সমাজের আস্থা কম। সমাজ মনে করে তরুণরা শুধু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কাজ করতে পারে, সিদ্ধান্ত কিংবা পলিসি তৈরীতে তারা সক্ষম নয়।
ঐতিহ্যগতভাবে আমাদের সমাজগুলো বয়োজ্যেষ্ঠদের দ্বারা পরিচালিত হয়। বয়োজ্যেষ্ঠরা যেহেতু সামাজিক নানা সংকট মোকাবেলায় অভিজ্ঞ তাই মনে করা হয় তারা যেভাবে সমাজের পলিসি নির্মাণ করবে কিংবা নানা সংকট মোকাবেলা করবে তা তরুণদের পক্ষে সম্ভব না। আর আমাদের অঞ্চলগুলোতে তরুণ সমাজের যে অবস্থা সেখানে দাঁড়িয়ে তরুণেরা খুব বেশি ঐতিহ্যগত সামাজিক পলিসিকে প্রশ্নও করতে পারে না। অনেকাংশে এটিই সত্য।
তবে, তারুণ্যকে সমাজে এনগেইজ করা সমাজের দায়িত্ব। যুগের সাথে সাথে সমাজে নানাধর্মী সংকট দেখা যায়। যার বেশিরভাগ আধুনিক বা মর্ডান প্রব্লেম যেগুলো তরুণ সমাজের জন্য খুব বেশি রেলিভেন্ট। যেমন, মাদক, জুয়া, ইভটিজিং, পর্নোগ্রাফি ও অন্যান্য।
সমাজের সাথে যখন তরুণদের একটি অঘোষিত দুরত্ব তৈরী হয়, সমাজ তখন তারুণ্যের সামাজিক সংকটকে ডিল করা বাদ দিয়ে এড়িয়ে চলে। প্রকৃতপক্ষে সমাজ তার ঐতিহ্যগত পলিসিতেই অনড় থাকে। সমাজ তার ঐতিহ্যগত জায়গা থেকে বের হয়ে তারুণ্য কেন্দ্রীক সামাজিক সমস্যা সমাধানের উদ্যোগী হয় না। সমাজ তারুণ্যের ভালো দিকের ক্রেডিট নেয়, খারাপ দিকের দায় নেয় না।
তারুণ্য কেন্দ্রীক সামাজিক সমস্যা দূরকরণের অন্যতম একটি নিরাময় হলো তরুণদের সমাজে সব সময় রেলিভেন্ট অবস্থায় রাখা। তাদের সামাজিক পলিসি তৈরীতে এনগেইজ করা, গাইড করা। তারুণ্যকে সামাজের কেন্দ্রবিন্দুতে রেখে চিন্তা করলে (লোকদেখানো না বরং প্রকৃতপক্ষেই) তারুণ্য কেন্দ্রীক সামাজিক সংকট ভালোভাবেই মোকাবেলা সম্ভব। এক্ষেত্রে সমাজকে ঐতিহ্যগত ইগো থেকে বের হয়ে আসতে হবে। সমাজকে সমাজের মতো ফাংশন করাতে পারতে হবে।