আমাদের সবারই রাজনীতি আছে। যারা বলে আমি রাজনীতি করি না তা হয় সুবিধাবাদী – না হয় ভন্ড। তীব্র অনাচারে যারা কিছু লোকের চোখে দুষ্ট হওয়ার ভয়ে মুখে কুলুপ এটে বসে থাকে, তাদেরও রাজনীতি আছে। যারা সময়ে আওয়াজ তুলে, তাদেরও রাজনীতি আছে।
ভাল্লাগে! ৫’ই আগষ্টের পরে একটি রাজনৈতিক সচেতন প্রজন্ম গড়ে উঠছে। রাজনীতির পক্ষ-বিপক্ষ থাকে। যুক্তি থাকে, পাল্টা যুক্তি থাকে। এটাই রাজনীতির সৌন্দর্য।
বিগত ১৭ বছর ফ্যাসিস্ট আওয়ামিলীগ শাসনামলে কোনো রাজনীতি ছিলো না। ছিলো ঘনঘোর ফ্যাসিবাদ। সামান্য একটি ফেসবুক পোস্টের জন্য অনেককেই জীবন দিতে হয়েছে।
৫’ই আগষ্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনার পালানোর পর থেকে দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হয়েছে। মানুষ কথা বলতে পারে। রাজনৈতিক তর্ক-বিতর্ক চলছে। চলছে মাঠ গুছানোর প্রস্তুতি। এর মধ্যে সংকট আসছে। সমাধানের পথ বের করার চেষ্টা হচ্ছে।
তবে এতোকিছুর ভীড়ে আমাদের মনে রাখতে হবে ‘জুলাই-অগাস্ট’ গণ-অভ্যুত্থানের টনিক হিসেবে কাজ করে আমাদের ঐক্য। হ্যা, এটাও সত্যি যে ৫’ই আগষ্টের পরে রাজনৈতিক দলসমূহের তাদের অভ্যন্তরীণ পলিসি ও ভোটের মাঠ বিবেচনায় কাজ করছে। রিয়াকশনারি রাজনীতি হচ্ছে। হবেই।
তবে, আমরা যদি ‘জুলাই-আগস্ট’ কে একটি স্পিরিট ধরি আর তা যদি হয় ফ্যাসিস্ট শক্তির বিরুদ্ধের স্পিরিট তাহলে ফ্যাসিবাদ প্রশ্নে আমাদের এক থাকতে হবে। ফ্যাসিবাদ প্রশ্নে আমাদের বিচ্ছিন্নতা আরেকটা ফ্যাসিবাদের জন্ম দিবে।
ফ্যাসিবাদ প্রশ্নে রাজনৈতিক দল, সাধারণ ছাত্র-জনতা এখনো যথেষ্ট সংঘবদ্ধ ও জিরো-টলারেন্স নীতিতে আছে। তবে ফ্যাসিবাদ প্রশ্ন টকশার টেবিল ও শাহাবাগের পাশাপাশি সারা বাংলাদেশেই ডিল করার প্রয়াস থাকতে হবে।
আর এক্ষেত্রে রাজনৈতিক নেতাদের পাশাপাশি শিক্ষিত সচেতন তরুণ সমাজের ভূমিকা অনস্বীকার্য। আদতে মেরুদণ্ড থাকা মানে কী? আপনার একটি পরিষ্কার স্টান্ড থাকবে, আপনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলবেন, রাজনৈতিক সংকট আপনার জ্ঞান ও মেধার আলোকে ডিল করার চেষ্টা করবেন।
তরুণ সমাজ যে স্বপ্ন আমাদের ‘জুলাই-আগষ্ট’ এ দেখিয়েছে সেই স্বপ্নের সময়কাল দীর্ঘায়িত হোক। আমরা এক নতুন ধারার রাজনীতি সামনে আনি। যে রাজনীতি জনগণের কথা বলবে, দেশের কথা বলবে।