Skip to content

২৪- এর চেতনা ও কিছু কথা!

চেতনা ধারণ করার বিষয়। দেখাদেখি চেতনা জাগ্রত হয় না। চেতনার জন্ম হয় উপলব্ধি থেকে; সেটি ৭১ -এর হোক কিংবা ২১-এর। চেতনার জাগ্রত হয় ত্যাগ থেকে; সেটি হতে পারে জীবন, অর্থ কিংবা আবার কখনো ভয় থেকেও। চেতনা জাগ্রত হয় কঠিনতম সেই অবস্থায় নিজের সাহসী অবস্থান থেকে।

আর তাই যুদ্ধের ময়দানে থাকা যোদ্ধাদের চেতনা, সহ-যোদ্ধাদের সামনে থেকে হারানোর চেতনা, ভয়ের সাথে লড়াই করে যাওয়ার চেতনা আর হুট করে চেতনাশীল হওয়ার মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে।

আমরা ৭১ দেখিনি। আমরা ২৪ দেখেছি। ২৪ -এ আমরা অনেকেই আমাদের জীবনে করা সবচেয়ে সাহসী কাজটি করেছি। এক মানুষরূপী হায়েনা স্বৈরাচার ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তাকে দেশ থেকে বিতারিত করেছি। আবু সাইদ, মুগ্ধ সহ আরো নাম জানা, না-জানা শহীদের রক্ত যত ঝড়েছে, আমাদের চেতনাশক্তি তত বেড়েছে।

এই চেতনার শক্তি অনেক। কোনো মহল যদি মনে করে থাকে ছাত্র-জনতা যার যার অবস্থানে ফিরে গিয়েছে, তারা জাতীয় কোনো সংকটে আর থাকবে না, তাহলে তারা অনেক বড় ভুল করছে।

রাজনৈতিক আন্দোলনে থাকার যেমন ঝুঁকি থাকে, আবার থাকে সফল হলে ভোগ-দখল কিংবা স্বার্থ কায়েমের সুযোগ। অন্তত আমাদের দেশের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলের চরিত্র তার-ই সাক্ষ্য দেয়। আর ঠিক এই কারণে রাজনৈতিক আন্দোলন গত ১৫ বছর সফল হয়নি। নানা ট্যাগ নিয়ে আন্দোলন বেগবান হওয়ার আগেই তার টুটি চেপে ধরা হতো।

তবে ২৪-এর ছাত্র-জনতার আন্দোলনে কোনো ব্যক্তিস্বার্থ ছিলো না। কেউ রিওয়ার্ডের আশার শেষ পর্যন্ত “এক দফা এক দাবী, হাসিনা তুই কবে যাবী” তে যায়নি। এখানে সফল না হলে ছাত্র-জনতার উপর স্ট্রিম রোলার চলতো আর সফল হয়েছি বলেই এক নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। আর কিছু না। সাধারণ ছাত্র-জনতা চাদাবাজি, দখলদারীর জন্যে হাসিনা রেজিমের সাথে যুদ্ধ করেনি।

আবার বলছি, আপনারা যদি কেউ দেওয়ালের লিখন পড়তে ব্যর্থ হন, ছাত্র-জনতার যৌক্তিক চাওয়া-পাওয়াকে এক পাশে ঠেলে দিয়ে ক্ষমতার রাজনীতির বন্দোবস্ত করেন, আরেকটি ফ্যাসিবাদের চারা রোপন করতে চান, তাহলে তার পরিণাম হবে ঠিক হাসিনা, আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ ও তার অন্যান্য দোসরদের মতো।

ফ্যাসিবাদ ব্যবস্থার কবর রচনা না করা পর্যন্ত, একটি ইনসাফের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা না করা পর্যন্ত আমাদের মিছিল চলবে। যৌক্তিক ক্রিটিসিজমের দরজা খোলা আছে। তবে অবস্থান অস্পষ্ট করে কেউ রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের পায়তারা করলে ছাত্র-জনতা তার উপর্যুক্ত জবাব দিবে।

রাজনৈতিক ঐক্যমতের ভিত্তিতে এক ইনসাফের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে সকল রাজনৈতিক দল এগিয়ে আসবে এটিই প্রত্যাশা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *