Skip to content

সমাজ থেকে রাষ্ট্রঃ যেভাবে ফ্যাসিবাদ ছড়ায়!

আপনি মানেন আর না মানেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে ভারত স্বাধীনতার পর থেকে দাস হিসেবেই ট্রিট করে। আর এই প্রভুত্ব জিইয়ে রাখার মিশনে ভারত সব থেকে বেশি সফল হয় বিগত ১৬ বছর ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে। আদতে বাংলাদেশ রাষ্ট্র ভারতের দাসত্বই করে গিয়েছে শেষ বছর গুলোতে। যে যখন ক্ষমতায় আসিন হয়েছে সেই-ই দাসত্বের শৃঙ্খলে নিজেদের আবদ্ধ করে ক্ষমতার আসন পাকাপোক্ত করেছে।

আমাদের সবার মনেই প্রশ্ন, ‘রাষ্ট্র কীভাবে দাসের মতো আচরণ করতে পারে’।

আসলে রাষ্ট্র নিয়ে আমাদের প্রশ্ন গুলোর উত্তর খুঁজতে রকেট সাইন্স জানতে হবে না। আপনার সমাজ, আপনার আশেপাশে তাকালেই সেটি উপলব্ধি করতে পারবেন।

রাষ্ট্র প্রধান কেন রাষ্ট্রকে দাস বানায়, রাষ্ট্রে কেন ইনসাফ নেই, রাষ্ট্রে কেন অধিকার আদায়ে মানুষ সোচ্চার না- এর সব উত্তর আপনার আশেপাশেই আসে।

রাষ্ট্র কীভাবে গঠিত হয়? প্রথমে মানুষ, তারপর পরিবার, তারপর সমাজ, এভাবেই রাষ্ট্র গঠিত। এক্ষেত্রে আমরা সমাজকে যদি রাষ্ট্রের ক্ষুদ্রতম একক ধরি, তাহলে আমাদের আলোচনা স্পষ্ট হবে।

আপনি আপনার সমাজে তাকিয়ে দেখুন। একদল পাবেন যারা সমাজের প্রভু হওয়ার চেষ্টা করে। তাদের প্রভুত্ব কায়েম রাখার জন্য কিছু দাসও নিযুক্ত করে। দাসীরা সেই প্রভুদের কাছ থেকে ব্যক্তিস্বার্থে হাসিল করার জন্য দাসত্বের ডালপালা মেলে। প্রভু-দাসীদের এই সামাজিক মেলবন্ধন আরোও প্রভু ও দাস তৈরী করে। এতে করে সমাজগুলোতে তথাকথিত প্রভু ও তাদের দাসীদের ছাড়া অন্যদের আওয়াজ কানে আসে না।

এখানে প্রভু ও দাসীদের ক্রাইটেরিয়া ডিফাইন করা কষ্টকর। তথাকথিত শিক্ষিত ও সুশীল সমাজও কখনো কখনো দাসের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। যোগ্যতাহীন, অগ্রহণযোগ্য লোকেরা প্রভু হওয়ার চেষ্টা করে। এই দাসত্ব বুদ্ধিবৃত্তিক। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধারাবাহিকতা বজায় রাখে।

একটি রাষ্ট্র কীভাবে ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠে?

এর উত্তরও আপনি আপনার আশেপাশে পাবেন। সমাজের তথাকথিত প্রভুরা তাদের হুকুম দাসীদের উপর চাপিয়ে দেয় আর দাসীরা সেই হুকুম হরফে হরফে পালন করে। সমাজে যেহেতু ব্যক্তিপূজারীদের সংখ্যা (প্রকাশ্যে কিংবা অপ্রকাশ্যে) বেশি, যারা প্রভু-দাসের বাইরে সমাজকে সমাজ হিসেবে ট্রিট করে তাদের ভূমিকা চোখে পড়ে না। আবার এই শ্রেণীর কখনো কখনো কোনো ভূমিকায় থাকে না।

এভাবে সমাজ থেকে ইনসাফ উঠে যায়। সমাজ ফাংশন করে না।

আর এই দাসত্ব যেহেতু প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ছড়ায় তাই প্রভুরা প্রভুত্ব জারি রাখতে চায় আর দাসীরা দাসত্ব।

আপনি যে সমাজেরই অংশ হোন না কেন। আপনি কি বিগত ১০-১৫ বছরে আপনার সমাজে কোনো পসিটিভ পরিবর্তন দেখেছেন? উত্তর হচ্ছে ‘না’। সমাজে বখে যাওয়া ছেলে-মেয়েদের সংখ্যা বেড়েছে, মাদকাসক্ত বেড়েছে, অপরাধ বেড়েছে, ইনসাফ উঠে গেছে, প্রকৃত শিক্ষিত লোকের সংখ্যা কমেছে।

আপনি দেখতে পাই আমাদের সমাজগুলোতে শুধু বেড়েছে দাস। যারা সমাজকে দাসত্ব থেকে মুক্তির চেষ্টা করেছে, একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনার চেষ্টা করে তাদের ট্যাগ দিয়ে অথর্ব সমাজ ও তার সিস্টেম থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে।

আমি আসলে রাষ্ট্র বলতে বুঝি আমার সমাজ, আমার চারিপাশ, আমার এলাকা। আমি রাষ্ট্রের ব্যর্থতা কিংবা অযোগ্যতায় তাই অবাক হয় না। আমি আমার চারিপাশ থেকেই সেই অথর্বতার জন্ম হতে দেখি।

ভঙ্গুর এই সমাজ ব্যবস্থা আর কিছু মূর্খ-ভন্ডদের চাপিয়ে দেওয়া সামাজিক তত্ত্বে আমি কুর্নিশ করি না। আমি ভয়াবহ অসামাজিক (আমাদের তথাকথিত সমাজ ব্যবস্থায়)।

যেদিন আমাদের সমাজ ব্যবস্থা উন্নত হবে। ভালো লোকেরা সমাজের কর্তা হয়ে উঠবে, ঠিক সেদিনই রাষ্ট্রীয় নানা দিবস শুধু তারিখ থেকে বেরিয়ে এসে জনমানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *